Pages

জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ, ১৯৮৯




সনদে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ,
বিশ্বের প্রতিটি মানুষের মর্যাদা এবং জাতিসংঘ নীতিমালা ও ঘোষণা অনুযায়ী সমঅধিকারের স্বীকৃতিই হচ্ছে স্বাধীনতা, ন্যায় বিচার ও বিশ্ব শান্তির ভিত্তি৷
উল্লেখিত বিষয়টি বিবেচনায় রেখে জাতিসংঘের প্রতিটি সদস্য দেশ উক্ত সনদে বর্ণিত মৌলিক মানবাধিকার এবং মানুষের মর্যাদা ও মূল্যবোধের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে তাদের বিশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেছে৷ আরো স্বাধীনভাবে সমাজকে এগিয়ে নিতে এবং জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে৷
এই বিষয়টি সামনে রেখে জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতিমালায় এ কথা স্বীকৃত হয়েছে যে গোত্র, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা, ধর্ম, রাজনৈতিক অথবা ভিন্নমত, জাতীয়তা কিংবা সামাজিক পরিচয়, শ্রেণী, জন্মসূত্র কিংবা অন্য কোন মর্যাদা নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষ কোন প্রকার বৈষম্য ছাড়াই এই ঘোষণায় বর্নিত সব ধরনের অধিকার ও স্বাধীনতা ভোগ করবে৷
জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা অনুযায়ী প্রতিটি শিশুর প্রাপ্য হচ্ছে বিশেষ যত্ন ও সহায়তা৷
এ বিষয়ে আস্থাশীল হতে হবে যে পরিবার হচ্ছে সমাজের প্রাথমিক সংগঠন৷ সুতরাং পরিবারের সকল সদস্য বিশেষ করে শিশু সদস্যদের যত্ন, শিশুর নিরাপত্তা ও কল্যাণ সম্পের্ক ঘোষণার সামাজিক আইনানুগ শর্তাবলী স্মরণ রেখে শিশুকে দত্তক এবং লালন পালনের দায়িত্ব প্রদান প্রসঙ্গে বিশেষভাবে শিশুদের নিরাপত্তা এবং কল্যাণ সম্পর্কে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে সামাজিক এবং আইনগত নীতিমালা ঘোষণা স্মরণ রাখতে হবে৷ শিশু সংক্রান্ত বিচার পরিচালনায় জাতিসংঘ ঘোষিত আদর্শ নূন্যতম বিধিমালা (বেইজিং রুলস) জরুরী অবস্থা এবং সশস্ত্র সংঘাতকালীন মহিলা ও শিশু নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঘোষণার শর্তাবলী রাখতে হবে৷

অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি, ১৯৬৬

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিল
অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক
আন্তর্জাতিক চুক্তি, ১৯৬৬
১৯৬৬ সালের ১৬ই ডিসেম্বর সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত ২২০০ ক (২১) মোতাবেক স্বাক্ষরদান, অনুসমর্থন ও যোগদানের জন্য গৃহীত ও উম্মুক্ত |
চুক্তির অনুচ্ছেদ ২৭ অনুযায়ী ১৯৭৬ সালের ৩ রা জানুয়ারী থেকে কার্যকর৷
প্রস্তাবনা

এই চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ, জাতিসংঘ সনদের ঘোষিত নীতিমালা অনুসারে মানব পরিবারের সকল সদস্যের সহজাত মর্যাদা এবং সমান ও অবিচ্ছেদ্য অধিকারের স্বীকৃতি যে বিশ্বে স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার এবং শান্তির ভিত্তি তা বিবেচনা করে;

এই অধিকারগুলো যে মানব-ব্যক্তিত্বের সহজাত মর্যাদা থেকে উদ্ভুত তা স্বীকার করে; "মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা" অনুসারে নাগরিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা এবং ভয় ও অভাব থেকে মুক্তি লাভের মানবিক আদর্শ অর্জন কেবল তখনই সম্ভব যদি এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তি তার অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অধিকারসমূহের সাথে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারও ভোগ করতে পারে এ কথা মেনে নিয়ে; জাতিসংঘ সনদের অধীন মানবাধিকার ও স্বাধিকারসমূহের প্রতি সর্বজনীন শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও সেগুলো উন্নয়নকল্পে দায়িত্বের কথা বিবেচনা করে;

প্রত্যেক ব্যক্তির যেমন অপর ব্যক্তি ও তার সমাজের প্রতি কর্তব্য রয়েছে তেমনই বর্তমান চুক্তিতে স্বীকৃত অধিকারসমূহের উন্নতিবর্ধন ও পালনের জন্য কঠোর চেষ্টা করা যে প্রত্যেকেরই দায়িত্ব তা উপলব্ধি করে;

নিম্নলিখিত অনুচ্ছেদসমূহ সম্পর্কে একমত হয়েছে :

প্রথম পরিচ্ছেদ

অনুচ্ছেদ ১
১.সকল জনগোষ্ঠীর আত্ননিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে৷ সে অধিকার বলে তারা অবাধে তাদের রাজনৈতিক মর্যাদা নির্ধারণ করে এবং স্বাধীনভাবে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মপ্রয়াস অব্যাহত রাখে৷
২. সকল জনগোষ্ঠী, পারস্পরিক সুবিধার নীতির ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক আইন থেকে উদ্ভুত দায়িত্বসমূহ ক্ষুন্ন না করে, নিজেদের স্বার্থে তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ও সংস্থান স্বাধীনভাবে ব্যবহার করবে৷ কোনক্রমেই কোন জনগোষ্ঠীকে তাদের জীবিকার উপায় থেকে বঞ্চিত করা যাবে না৷

নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তি

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিল
নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তি
১৯৬৬ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত ২২০০ ক (২১) মোতাবেক স্বাক্ষরদান, অনুসমর্থন ও যোগদানের জন্য গৃহীত ও উম্মুক্ত৷
চুক্তির ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ১৯৭৬ সালের ২৩ শে মার্চ থেকে কার্যকর৷

ভূমিকা:

এই চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ যেহেতু স্বীকার করে যে, জাতিসংঘের সনদে ঘোষিত নীতি মোতাবেক পৃথিবীতে স্বাধীনতা, ন্যায়পরতা এবং শান্তির ভিত্তি হচ্ছে সকল মানুষের স্বাভাবিক মর্যাদা ও অবিচ্ছেদ্য সমঅধিকারের স্বীকৃতি, যেহেতু স্বীকৃত যে, মানব হৃদয়ের স্বাভাবিক মহত্ত্ব থেকে এই সকল অধিকারের উত্পত্তি ঘটেছে,

যেহেতু স্বীকার করে যে,
মানবাধিকার সার্বজনীন ঘোষণা অনুযায়ী মানুষ সত্যিকারভাবে অভাব এবং ভয়-ভীতি থেকে স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারে, যদি সে অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক তথা নাগরিক এবং রাজনৈতিক অধিকারসমূহ উপভোগ করতে পারে,

যেহেতু মনে করে যে,
জাতিসংঘের আওতাধীন রাষ্ট্রসমূহের দায়িত্ব রয়েছে মানবাধিকার এবং স্বাধীনতাসমূহ প্রতিষ্ঠা এবং উহার প্রতি সার্বজনীন সম্মান প্রদর্শন,

যেহেতু মনে করে যে,
প্রতিটি ব্যক্তির কর্তব্য রয়েছে অন্যের প্রতি এবং নিজ সমাজের প্রতি আলোচ্য চুক্তিতে বর্ণিত অধিকারসমূহের প্রতিষ্ঠা এবং সংরক্ষণের জন্য, সেহেতু, অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ একমত হয়ে নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহ (আলোচ্য চুক্তিতে) সম্বিবেশিত করছে :


প্রথম পরিচ্ছেদ
অনুচ্ছেদ-১
১. আত্ননিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে সকল জাতিসমূহের৷ এ অধিকার বলে তারা স্বাধীনভাবে ঠিক করবে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান এবং মুক্তভাবে চালিয়ে যাবে তাদের স্বকীয় অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়ন৷
২. সকল জাতিসমূহই তাদের স্ব-স্ব প্রয়োজনে তাদের প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ববহার করতে পারবে৷ পারস্পরিক স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় প্রতিষ্ঠিত কোন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রতি পক্ষপাত দেখিয়েও তাদেরকে এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না৷ কোন কারণেই কোন জাতিকে তার নিজস্বভাবে বাঁচার এই উপায় উদ্ভাবন থেকে বঞ্চিত করা যাবে না৷
৩. চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ অছি রাষ্ট্রসহ আত্ননিয়ন্ত্রণের এই অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালাবে এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার ঘোষণা অনুযায়ী এই অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে৷

২য় পরিচ্ছেদ
অনুচ্ছেদ-২
১. জাতি, বর্ন, ভাষা, রাজনৈতিক ও অন্যান্য মতাদর্শ, ধনী, গরীব ও জb¥সূত্র নির্বিশেষে সকল ব্যক্তির অধিকারসমূহ যা আলোচ্য চুক্তিতে বর্ণিত হয়েছে তার প্রতি অংশগ্রহণকারী প্রতিটি রাষ্ট্র প্রদর্শন এবং নিশ্চিত করবে৷
২. প্রতিটি অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র যারা এখনও তাদের দেশে আইনগত এবং অন্যান্য পদক্ষেপ দ্বারা উক্ত অধিকারসমূহ প্রদান করেনি তারা আলোচ্য চুক্তির গঠনতান্ত্রিক পদ্ধতি এবং শর্তানুযায়ী সেই সব আইনগত ও অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবে যাতে উক্ত অধিকারসমূহ কার্যকর হয়৷
৩. আলোচ্য চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক রাষ্ট্র নিশ্চিত করতে চায় যে,
(ক) যদি কোন ব্যক্তির চুক্তিতে বর্ণিত অধিকার এবং স্বাধীনতাসমূহ লংঘিত হয় তবে উহার প্রয়োজনীয় প্রতিকারের ব্যবস্থা করতে হবে, যদিও উক্ত লংঘন সরকারি কাজে নিয়োজিত ব্যক্তির দ্বারাও সংগঠিত হয়;
(খ) যদি কোন ব্যক্তি এই ধরনের প্রতিকারে দাবি করে তবে তার উক্ত দাবির যথার্থতা প্রশাসনিক বিচার বিভাগীয় বা অন্য কোন যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিরূপিত হবে এবং তার বিচার বিভাগীয় প্রতিকার পাবার সম্ভাবনা নিশ্চত করতে হবে;
(গ) প্রতিকারের ব্যবস্থা অনুমোদিত হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ উহা কার্যকর করে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে৷

অনুচ্ছেদ - ৩
চুক্তিতে বর্ণিত নাগরিক ও রাজনৈতিক সকল অধিকারসমূহ উপভোগ নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠায় অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ নিশ্চয়তা বিধান করবে৷

অনুচ্ছেদ - ৪
১. জরুরী অবস্থার সময়ে যখন জাতির জীবন হুমকির সম্মুখীন হয় এবং উহা যখন জাতির অস্তিত্বের জন্য সরকারিভাবে জারি করা হয় তখন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আলোচ্য চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ চুক্তির পরিপন্থি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে, তবে উক্ত পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক হতে পারবে না এবং জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা, ধর্ম অথবা জণ্মসূত্রের পার্থক্য করে উহা প্রয়োগ করা যাবে না৷
২. এই শর্তে মোতাবেক ধারা ৬, ৭, ৮ (অনুচ্ছেদ ১ এবং ২) ১১, ১৫, ১৬ এবং ১৮ এর ক্ষতিকারক কিছু তৈরি করা যাবে না৷
৩. আলোচ্য চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী কোন রাষ্ট্র যদি উপরোক্ত ধারার ক্ষতিকারক কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে তবে তা শীঘ্র জাতিসংঘের মহাসচিবের মাধ্যমে চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য রাষ্ট্রসমূহকে অবহিত করতে হবে, উহা গ্রহণের কারণসমূহ জানাতে হবে, উক্ত ক্ষতিকর পদক্ষেপ তুলে নেয়ার তারিখও মহাসচিবের মাধ্যমে সকল রাষ্ট্রসমূহকে আবার জানিয়ে দিতে হবে৷

অনুচ্ছেদ - ৫
১. আলোচ্য চুক্তির কিছুই এমনভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে না যার ফলে কোন রাষ্ট্র, দল অথবা ব্যক্তি তাদের কোন কাজ দ্বারা এই চুক্তির কোন অধিকার বিনষ্ট করে৷
২. কোন দেশের আইন, প্রথা বা রীতি-নীতির কোন অধিকার, যে কোন মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি বাধা বা অপবাদ বলে বলবত্ থাকে, তবে তা আলোচ্য চুক্তিতে গ্রহণীয় হবে না৷

তৃতীয় পরিচ্ছেদ
অনুচ্ছেদ - ৬
১. প্রতিটি ব্যক্তিরই বাঁচার সহজাত অধিকার রয়েছে৷ তাই এই অধিকারকে আইন দ্বারা সংরক্ষণ করতে পারে৷ কাউকেই এই অধিকার থেকে খামখেয়ালীভাবে বঞ্চিত করা যাবে না৷
২. যে সকল দেশে মৃতু্য দন্ডাদেশ রহিত করা হয়নি সেখানে উক্ত দন্ডাদেশ আরোপ করা যাবে শুধুমাত্র কঠিন অপরাধের ক্ষেত্রে এবং তা হবে অপরাধ করা সময়কালের সেই দেশের বলবত্ আইন অনুসারে৷ উক্ত দন্ডাদেশ আলোচ্য চুক্তির শর্তে এবং জেনোসাইডের প্রতিরোধ এবং চুক্তির পরিপন্থী হতে পারবে না৷
৩. জীবনের বঞ্চনা যখন জেনোসাইডের অপরাধ সংগঠিত করায়, তখন বুঝতে হবে এই ধারার কোন কিছু কোন রাষ্ট্রকে ক্ষমতা দেয় না জেনোসাইডের প্রতিরোধ এবং শান্তি চুক্তির বিরুদ্ধে ক্ষতিকারক কিছু গ্রহণ করতে৷
৪. মৃত্যু দন্ডাদেশ প্রাপ্ত ব্যক্তির অধিকার রয়েছে দন্ডাদেশ থেকে ক্ষমা অথবা লঘু দন্ডাদেশ সকল ক্ষেত্রেই অনুমোদন করা যেতে পারে৷

৫. ১৮ বছরের নিচের বয়সী ব্যক্তি কর্তৃক সংগঠিত অপরাধের জন্য তাকে মৃত্যু দন্ডাদেশ দেয়া যাবে না এবং গর্ভবতী মেয়েদের প্রতিও মৃত্যু দন্ডাদেশ দেয়া যাবে না এবং গর্ভবতী মেয়েদের প্রতিও মৃত্যু দন্ডাদেশ কার্যকরী করা যাবে না৷

৬. আলোচ্য চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী কোন রাষ্ট্রকে এই ধারার কোন কিছুই মৃতু¨দন্ডাদেশ রহিত করতে বাধা বা বিলম্বের সৃষ্টি করবে না৷

অনুচ্ছেদ - ৭
কেউ পীড়ন, নির্মম, আমানবিক অথবা অপমানজনক আচরণ কিংবা শাস্তির শিকার হবে না৷ বিশেষ করে, কারও মুক্ত মতামত ছাড়া তার ওপর স্বাস্থ্যগত অথবা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো যাবে না৷

অনুচ্ছেদ - ৮
১. কাউকে দাস বানানো যাবে না৷ বিভিন্ন ধরনের দাস প্রথা এবং দাস ব্যবসা নিষিদ্দ ঘোষণা করতে হবে৷
২. কৃতদাসত্বে কাউকে রাখা যাবে না৷
৩. (ক) বাধ্যতামূলক অথবা চাপিয়ে দেয়া শ্রম কাউকে দিয়ে সম্পাদন করা যাবে না;
(খ) যথাযথ আদালত কর্তৃক অপরাধের জন্য শাস্তি স্বরুপ কঠিন শ্রম অথবা যে সকল দেশে অপরাধের জন্য কঠিন শ্রমের দন্ডাদেশ দেয়া হয়, অনুচ্ছেদ ৩ (ক) ঐ সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না;
(গ) "চাপিয়ে দেয়া অথবা বাধ্যতামূলক শ্রম" - কথাটি নিম্নে বর্ণিত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না;
(i) সেই সকল শ্রম বা কাজ, যা অনুচ্ছেদ (খ) এ উল্লেখ নাই কিন্তু উহা স্বাভাবিকভাবেই সেই ব্যক্তির করার দরকার হয়, যাকে আদালত কর্তৃক আইনানুগভাবে আটক থেকে মুক্তি পাবার জন্য শর্ত মোতাবেক করতে হয়;
(ii) সামরিক ধরনের কোন কাজ অথবা দেশের আইনের প্রয়োজনে যে কোন জাতীয় কাজ;
(iii) জরুরী অথবা দুর্যোগের সময়ে জাতির যখন হুমকির সম্মুখীন তখনকার যে কোন কাজ;
(iv) স্বাভাবিক নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে যে কাজ বা শ্রম৷

মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র





gvbevwaKv‡ii mve©Rbxb †NvlYvcÎ

মানবাধিকার সনদ একটি ঘোষণা। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর প্যারিসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এই ঘোষণা প্রদান করা হয়। প্রত্যেক মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে এই সনদ ঘোষিত হয়।
 
মুখবন্ধ
যেহেতু মানব পরিবারের সকল সদস্যের সহজাত মর্যাদা সম অবিচ্ছেদ্য অধিকার-সমূহের স্বীকৃতি বিশ্বে স্বাধীনতা, ন্যায়-বিচার শান্তির ভিত্তি;
যেহেতু মানবিক অধিকারসমূহের প্রতি অবজ্ঞা ঘৃণা মানবজাতির বিবেকের পক্ষে অপমানজনক বর্বরোচিত কাযর্কলাপে পরিণতি লাভ করেছে এবং সাধারণ মানুষের সর্বোচ্চ আশা-আকাঙ্খার প্রতীক হিসেবে এমন একটি পৃথিবীর সূচনা ঘোষিত হয়েছে যেখানে মানুষ বাক বিশ্বাসের স্বাধীনতা এবং ভয় অভাব থেকে নিষ্কৃতি ভোগ করবে;
যেহেতু চূড়ান্ত পদক্ষেপ হিসেবে মানুষকে অত্যাচার নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হতে বাধ্য করা না হলে মানবিক অধিকারসমূহ অবশ্যই আইনের শাসনের দ্বারা সংরক্ষিত করা উচিত;
যেহেতু জাতিসমূহের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উন্নয়নে সহায়তা করা অবশ্যক; যেহেতু জাতিসংঘভুক্ত জনগণ সনদের মাধ্যমে মৌল মানবিক অধিকারসমূহ অধিকারসমূহ, মানুষের মর্যাদা মূল্য এবং নারী পুরুষের সম-অধিকারের প্রতি আস্থা পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং সামাজিক অগ্রগতি ব্যাপকতর স্বাধীনতা উন্নততর জীবনমান প্রতিষ্ঠাকল্পে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ;
যেহেতু সদস্যরাষ্ট্রসমূহ জাতিসংঘের সহযোগিতায় মানবিক অধিকার মৌল স্বাধিকারসমূহের প্রতি সার্বজনীন শ্রদ্ধা মান্যতা বৃদ্ধি অর্জনে অঙ্গীকারবদ্ধ;
যেহেতু সকল অধিকার স্বাধিকারের ব্যাপারে একটি সাধারণ সমঝোতা উক্ত অঙ্গীকার সম্পূর্ণরূপে আদায় করার জন্য সর্বাপেক্ষা গুরyত্বপূর্ণ;
তাই সাধারণ পরিষদ সকল জাতি জনগোষ্ঠীর অগ্রগতির একটি সাধারণ মানদন্ড হিসেবে জারি করছে এই মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র
লক্ষ্যে প্রত্যেক ব্যক্তি সমাজের প্রত্যেক অঙ্গ মানবিক অধিকারসমূহের এই সর্বজনীন ঘোষণাপত্রটিকে সর্বদা স্মরণ রেখে শিক্ষাদান জ্ঞান প্রসারের মাধ্যমে সকল অধিকার স্বাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাবোধে জাগ্রত করতে এবং জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রগতিশীল ব্যবস্থাদির দ্বারা সদস্য-রাষ্ট্রসমুহের জনগণ তাদের অধীনস্থ অঞ্চলসমূহের অধিবাসীবৃন্দ উভয়ের মধ্যে ঐগুলোর সর্বজনীন কার্যকর স্বীকৃতি মান্যতা অর্জনের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাবে৷
অনুচ্ছেদ- বন্ধনহীন অবস্থায় এবং সম-মর্যাদা অধিকারাদি নিয়ে সকল মানুষই জন্মগ্রহণ করে৷ বুদ্ধি বিবেক তাদের অপর্ণ করা হয়েছে; অতএব  ভ্রাতৃত্বসুলভ মনোভাব নিয়ে তাদের একে অন্যের প্রতি আচরণ করা উচিত৷
অনুচ্ছেদ- যে কোন প্রকার পার্থক্য যথা জাতি, গোত্র, বর্ণ, নারী-পুরুষ, ভাষা, ধর্ম, রাজনৈতিক বা অন্য মতবাদ, জাতীয় বা সামাজিক উত্পত্তি, সম্পক্তি, , বা অন্য মর্যাদা নির্বিশেষে প্রত্যেকেই ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত সকল অধিকার স্বাধিকারে স্বত্ববান৷
অধিকন্তু, কোন ব্যক্তি যে দশ বা অঞ্চলের অধিবাসী, তা স্বাধীন, অছিভুক্ত এলাকা, অস্বায়ত্তশাসিত অথবা অন্য যে কোন প্রকার সীমিত সার্বভৌমত্বের মধ্যে থাকুক না কেন, তার রাজনৈতিক, সীমানাগত আন্তর্জাতিক মর্যাদার ভিত্তিতে কোন পার্থক্য করা চলবে না৷
অনুচ্ছেদ- প্রত্যেকেরই জীবন-ধারণ, স্বাধীনতা ব্যক্তি নিরাপত্তার অধিকার রয়েছে৷
অনুচ্ছেদ- কাউকে দাস হিসেবে বা দাসত্বে রাখা চলবে না, সকল প্রকার দাস-প্রথা দাস-ব্যবসা নিষিদ্ধ থাকাবে৷
অনুচ্ছেদ- কাউকে নির্যাতন অথবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক অথবা অবমাননাকর আচরণ অথবা শাস্তি ভোগে বাধ্য করা চলবে না৷
অনুচ্ছেদ- আইনের সমক্ষে প্রত্যেকেরই সর্বত্র ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতিলাভের অধিকার রয়েছে৷
অনুচ্ছেদ- আইনের কাছে সকলেরই সমান এবং কোনরূপ বৈষম্য ব্যতিরেকে সকলেরই আইনের দ্বারা সমভাবে রক্ষিত হওয়ার অধিকার রয়েছে৷ এই ঘোষণাপত্রের লঙ্ঘনজনিত বৈষম্য বা এরূপ বৈষম্যের উস্কানির বিরyদ্ধে সমভাবে রক্ষিত হওয়ার অধিকার সকলেরই আছে৷
অনুচ্ছেদ- যে কার্যাদির ফলে শাসনতন্ত্র বা আইন কর্তৃক প্রদত্ত মৌল অধিকারসমূহ লঙ্ঘিত হয় সে সবের জন্য উপযুক্ত জাতীয় বিচার আদালতের মারফত কার্যকর প্রতিকার লাভের অধিকার প্রত্যেকেরই রয়েছে৷
অনুচ্ছেদ- কাউকে খেয়ালখুশিমত গ্রেফতার, আটক অথবা নির্বাসন করা যাবে না৷
অনুচ্ছেদ-১০ প্রত্যেকেরই তার অধিকার দায়িত্বসমূহ এবং তার বিরুদ্ধে আনীত যে কোন ফৌজদারী অভিযোগ নিরূপণের জন্য পূর্ণ সমতার ভিত্তিতে একটি স্বাধীন নিরপেক্ষ বিচার-আদালতে ন্যায্যভাবে প্রকাশ্যে শুনানী লাভের অধিকার রয়েছে৷
অনুচ্ছেদ-১১ কোন দন্ডযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত হলে প্রত্যেকেরই আত্নপক্ষ সমর্থনের নিশ্চয়তা দেয় এমন গণ-আদালত কর্তৃক আইন অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ বলে বিবেচিত হওয়ার অধিকার রয়েছে৷
কাউকেই কোন কাজ বা ক্রটির জন্য দন্ডযোগ্য অপরাধে দোষী সাবাস্ত করা চলবে না, যদি সংঘটনকালে তা জাতীয় বা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী দন্ডযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য না হয়ে থাকে৷ আবার দন্ডযোগ্য অপরাধ সংঘটনকালে যতটুকু শাস্তি প্রযোজ্য ছিল তার চেয়ে শাস্তি প্রয়োগ চলবে না৷
অনুচ্ছেদ-১২ কাউকে তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, পরিবার, বসতবাড়ি বা চিঠিপত্রের ব্যাপারে খেয়ালখুশিমত হস্তক্ষেপ অথবা সম্মান সুনামের ওপর আক্রমণ করা চলবে না৷
অনুচ্ছেদ-১৩ নিজ রাষ্ট্রে সীমানার মধ্যে চলাচল বসতি স্থাপনের অধিকার প্রত্যেকেরই রয়েছে৷
প্রত্যেকেরই নিজ দেশসহ যে কোন দেশ ছেড়ে যাওয়ার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অধিকার রয়েছে৷
অনুচ্ছেদ-১৪ নির্যাতন এড়ানোর জন্য প্রত্যেকেরই অপর দেশসমূহে আশ্রয় প্রার্থনা আশ্রয় লাভ করার অধিকার রয়েছে৷